জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আলোচনার টেবিলেই সমাধান হবে সালাহউদ্দিন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আলোচনার টেবিলেই সমাধান হবে : সালাহউদ্দিন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা আলোচনার টেবিলে আছি। সমাধানের জন্য, এক জায়গায় যাওয়ার জন্য, প্রতিদিন ইনোভেটিভ আইডিয়াস বা জাতির পক্ষে সমাধানের জন্য প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছি। এখন যদি এই আলোচনার টেবিলে সমাধান হয়, আমি আশা করি হবে ইনশাআল্লাহ। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যে কোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে আমরা বন্ধ করতে পারবো। যেটা আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি এবং অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছে, যদি এটা আমরা ঝুলিয়ে রাখি, যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আমরা অনিশ্চিত করি, বাধাগ্রস্ত করি বা বিলম্বিত করি— তাহলে সেটার বেনিফিশিয়ারি কে হবে? পতিত ফ্যাসিবাদ হবে। সেটার বেনিফিশিয়ারি কে হবে? কোনো রকমের কোনো অসাংবিধানিক শক্তি হবে। তাহলে সেটার পরিণতি কী হবে- এই জাতি অনেকবার সে পরিণতি ভোগ করেছে, সেই পরিণতিকে আমরা আবার আহ্বান জানাতে পারি না। সুতরাং আমরা আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে আগাই এবং একটা সমাধানের দিকে যাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, এক বছর হয়ে গেল ইন্টেরিম গভর্মেন্টের, সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় সাংবিধানিক নিয়মে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নামে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতিকে যে মতামত দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স অনুসারে পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে সেটা কি অকার্যকর হয়ে গেল?  এটা কি জুডিশিয়ারিতে অথবা সুপ্রিম কোর্টে এখনো পর্যন্ত এর বিপরীতে কোনো সিদ্ধান্ত এসেছে? আসে নাই। সুতরাং এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলাটা আমি মনে করি অনেকটা রাজনৈতিক বক্তব্যের মত। এটার কোনো লিগ্যালিটি নাই।

তিনি বলেন, কনস্টিটিউশনাল অর্ডার ইস্যু করে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে, এখনই সেটা কার্যকর হবে, সেটা কি আগামীকালকে বা পরশু চ্যালেঞ্জ হবে না? তো সেরকম একটা খারাপ নজির কি আমরা জাতির সামনে উত্থাপন করতে পারি? অবশ্যই পারি না। কিন্তু আমরা সমাধান চাই। সমাধান চাই বলেই আমরা কিছু বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। যেগুলো বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাবো।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা চলছে, এর বাইরে একটি দল পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে, এটি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলের দাবি নিয়ে আন্দোলন করার অধিকার আছে। পিআর বিষয়টি নির্বাচনে জনগণের কাছে নিয়ে যাক। এন্ড অব দ্য ডে জনগণই তো ডিসাইড করবে, কী সিদ্ধান্ত নেবে? আমরা রাস্তায় কে কয়টা জনসভা করলাম, কে কয়টা মিছিল দিলাম তার ওপর কি পিআর নির্ধারিত হবে? সেটার জন্য একটা প্রক্রিয়ায় আলোচনার টেবিলে আসতে হবে। সে আলোচনার টেবিলে আমরা আছি। সেটা এখনো অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, পিআরের মাধ্যমে সবসময় একটা অনিশ্চিত সরকার ব্যবস্থা থাকে এবং ঝুলন্ত পার্লামেন্ট থাকে। কখনো মেজরিটির ভিত্তিতে সরকার গঠন করার মত মেজরিটি পাওয়া যায় না এবং সেই সরকার ব্যবস্থায় তখন রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা যায় না। তার উদাহরণ তো আমাদের পার্শ্ববর্তী অন্য একটা দেশে ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি। আমরা সেরকম একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অঙ্গীকার করতে পারি না।

তিনি বলেন, জনগণ হচ্ছে সুপ্রিম অথরিটি। তারপরও এ দেশের জনগণ তো মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে এস্টাবলিশড করেছে। এ দেশের জনগণ বারবার গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছে। বারবার এই দেশে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিভিন্ন সময় সেখান থেকে এই জাতি উদ্ধার হয়েছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, নেক্সট পার্লামেন্টে কিছু মৌলিক বিষয় এমেন্ডেড হবে যেগুলোতো আমরা এখন সম্মত হয়েছি। ঐকমত্য কমিশনের সনদের মধ্যে সেই বিষয়গুলো পরিবর্তনে অবশ্যই রেফারেন্ডাম নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *