মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ও তার স্ত্রী সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে বছরের অধিকাংশ সময় ভারতে বসবাস করেও বাংলাদেশের কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে একটি বাড়ি কিনেছেন এবং সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন।
তবে, অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, তার স্ত্রী অসুস্থতার কারণে ছুটি নিয়ে ভারতে আছেন। দুই দফায় তিনি ছয় মাস ছুটি নিয়েছেন। সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী চলছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ ও তার স্ত্রী ভারত চলে যান।
কিছুদিন পর অধ্যক্ষ বাড়ৈ দেশে ফিরলেও তার স্ত্রী এখনো ভারতে অবস্থান করছেন। যাওয়ার আগে চম্পা মন্ডল চেকে স্বাক্ষর করে রেখে যান, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দুর্নীতির সত্যতা পাওয়ায় গত ১৮ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর থেকে উভয়ের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।
আদেশে স্বাক্ষর করেন মাউশির সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ।
অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ভারতে থাকাকালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিমল পান্ডে।
কলেজের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই দম্পতি কলেজের পরিচালনা পর্ষদ ও প্রশাসনিক মহলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন অফিস সহায়ক সজল সরকার।
নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা প্রেমানন্দ সরকার বলেছেন, দুর্লভানন্দ বাড়ৈ চাকরি নিয়েছেন অনিয়ম করে। তিনি ভারতের কল্যাণীতে বাড়ি করেছেন।
সেখানেই তার স্ত্রী-সন্তানরা আছেন। অথচ, বেতন তুলছেন বাংলাদেশে। নামমাত্র মেডিকেল লিভ নিয়েছেন। বেসরকারি কলেজে এক মাসের বেশি ছুটি হয় না। অথচ, তিনি ছুটি নিয়েছেন ৬ মাসের।
ডাসার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফ-উল আরেফীন বলেছেন, “অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”